বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের নতুন তৃতীয় ইউনিটে বিনিয়োগ বাড়াল ৯৮০ কোটি টাকা

বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের নতুন তৃতীয় ইউনিটে বিনিয়োগ বাড়াল ৯৮০ কোটি টাকা, বাংলাদেশের রং শিল্পে নতুন দিগন্ত খুলছে বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের। পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত এই বহুজাতিক কোম্পানি তাদের নতুন ও তৃতীয় উৎপাদন ইউনিটের জন্য বিনিয়োগ পরিকল্পনা সংশোধন করেছে। নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী, কোম্পানি এই ইউনিটে মোট ৯৮০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। আগের পরিকল্পনায় এই ইউনিটে বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ৮১৩ কোটি টাকা, অর্থাৎ নতুন প্রস্তাবে বিনিয়োগের পরিমাণ ১৬৭ কোটি টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
রোববার (২ নভেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে কোম্পানির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বার্জার পেইন্টসের নতুন তৃতীয় উৎপাদন ইউনিটটি জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে নির্মাণ করা হচ্ছে। কোম্পানির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এটি দেশের রঙ শিল্পের বাজারে অন্যতম বৃহৎ কারখানা হতে যাচ্ছে। মোট ৪০ একর জমির ওপর নির্মাণাধীন এই অত্যাধুনিক কারখানাটি দেশের রঙ উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থাকে নতুন মাত্রা দিতে যাচ্ছে।
নতুন বিনিয়োগ পরিকল্পনার মাধ্যমে বার্জার পেইন্টস কেবল তাদের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়াবে না, বরং দেশের রঙ শিল্পে তাদের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করবে। কোম্পানির পরিকল্পনা অনুযায়ী, তৃতীয় ইউনিটের নির্মাণ কাজ ২০২৭ সালের ৩১ মার্চের মধ্যে সম্পন্ন হবে। অর্থাৎ, এই কারখানার বাণিজ্যিক উৎপাদন কার্যক্রম ২০২৭ সালের এপ্রিল মাস থেকে শুরু হবে।
আরো পড়ুনঃ বিকাশের রেকর্ড মুনাফা নয় মাসে ৫০৪ কোটি টাকা – বেড়েছে আয়ও
বার্জার পেইন্টস কোম্পানি জানিয়েছে, নতুন তৃতীয় ইউনিটের নির্মাণ এবং উৎপাদন কার্যক্রমের মাধ্যমে দেশীয় বাজারে বিনিয়োগের পুনঃপ্রতিষ্ঠা এবং রঙ শিল্পে প্রতিযোগিতার শক্তিশালীীকরণ সম্ভব হবে। এই ইউনিট থেকে উৎপাদিত রঙের মান ও পরিমাণ উভয়ই বৃদ্ধি পাবে, যা গ্রাহক ও বাজার উভয়ের জন্য ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বার্জার পেইন্টসের পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, কোম্পানি তাদের বিনিয়োগকারীদের অনুমোদন নিতে আগামী ১৮ ডিসেম্বর সকাল ১০টায় ভার্চুয়াল মাধ্যমে বিশেষ সাধারণ সভা (ইজিএম) আহ্বান করেছে। এই সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ নভেম্বর। সভায় বিনিয়োগকারীরা এই প্রস্তাব অনুমোদন দিলে তৃতীয় ইউনিটের বিনিয়োগ কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে।
বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের কর্পোরেট পরিচালকরা বিশ্বাস করছেন, নতুন এই ইউনিটের মাধ্যমে দেশীয় রঙ উৎপাদন শিল্পে উৎপাদনশীলতা ও প্রযুক্তি উন্নয়নের নতুন ধারা শুরু হবে। কোম্পানির এই বিনিয়োগ দেশের রঙ শিল্পে বৈদেশিক প্রযুক্তি ও মানসম্মত উৎপাদন প্রবর্তনের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ তৈরি করবে।
কোম্পানির কর্পোরেট কর্মকর্তারা মনে করছেন, আগামী কয়েক বছরে রঙ শিল্পে গ্রাহকের চাহিদা বৃদ্ধি পাবে। এই চাহিদা পূরণে নতুন তৃতীয় ইউনিট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। নতুন কারখানার মাধ্যমে কাজের সুযোগ সৃষ্টি, যুবক শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ, এবং সরবরাহ ব্যবস্থার দক্ষতা বৃদ্ধি সম্ভব হবে।
বার্জার পেইন্টসের তৃতীয় ইউনিটের বিনিয়োগ শুধু উৎপাদন বাড়ানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না; এটি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও শিল্পায়নের উন্নয়নে অবদান রাখবে। বিশেষ করে, স্থানীয় অর্থনীতিতে কর্মসংস্থান সৃষ্টির ক্ষেত্রে এই প্রকল্প উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
কোম্পানির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তৃতীয় ইউনিটের উৎপাদন প্রক্রিয়ায় অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে, যা গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী দ্রুত উৎপাদন এবং মানসম্মত রঙ সরবরাহ নিশ্চিত করবে। এছাড়াও, পরিবেশবান্ধব উৎপাদন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা হবে।
রঙ শিল্পে বার্জার পেইন্টসের দীর্ঘমেয়াদি কৌশল হলো, উচ্চ মানের পণ্য, উন্নত প্রযুক্তি, এবং বাজারের চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন বৃদ্ধি। নতুন তৃতীয় ইউনিটের মাধ্যমে এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে নতুন মাত্রা যোগ হবে। কোম্পানি আশা করছে, এই বিনিয়োগের ফলে বাজারে তাদের অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি পাবে এবং গ্রাহকের মধ্যে আরও বিশ্বস্ততা তৈরি হবে।
ডিএসইতে প্রকাশিত বার্জার পেইন্টসের তথ্য অনুযায়ী, নতুন বিনিয়োগ ও উৎপাদন ইউনিটের নির্মাণ কার্যক্রম শুরু হলে দেশের রঙ উৎপাদন শিল্পে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। এটি কেবল কোম্পানির ব্যবসায়িক সম্প্রসারণ নয়, বরং দেশের রঙ শিল্পকে আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী উন্নীত করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে।
আরো পড়ুনঃ অনলাইন ইনকাম করার উপায় – অনলাইন ব্যবসা
সংক্ষেপে বলা যায়, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশের এই তৃতীয় ইউনিটের মাধ্যমে:
- দেশের রঙ শিল্পে উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
- উচ্চ মানের রঙের সরবরাহ নিশ্চিত হবে।
- নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
- স্থানীয় অর্থনীতিতে প্রভাব ও শিল্পায়ন বৃদ্ধি পাবে।
- গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী উৎপাদন এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়ন নিশ্চিত হবে।
এভাবে, বার্জার পেইন্টসের ৯৮০ কোটি টাকার বিনিয়োগ পরিকল্পনা কেবল একটি ব্যবসায়িক উদ্যোগ নয়, বরং দেশের রঙ শিল্পের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের সূচনা। কোম্পানি আশা করছে, নতুন এই কারখানার মাধ্যমে তারা বাংলাদেশের বাজারে নিজেদের অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে পারবে।
সানপোস্ট বিডি/ঢাকাপোস্ট



